ঢাকা,বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে

সিংহ ‘রাসেলের’ ২১ দিন পর এবার মারা গেছে ‘টুম্পা’

এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
সিংহ ‘রাসেল’ ও সিংহী ‘টুম্পা’। তারা পরস্পর ভাই-বোন। উভয়ের জন্ম কক্সবাজারের চকরিয়াস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। ২০০৭ সালে রাসেল ও ২০০৮ সালে টুম্পা জন্মগ্রহণ করেন। ভালোই কাটছিলো তাদের দিনকাল। হঠাৎ নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দেয় তারা। শারিরিক ওজন কমতে থাকে ভাই-বোনের। দ্বারস্থ হতে হয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। সনাক্ত হয় ভাই-বোনই এনাপ্লাজমা ও বিউবমিয়া স্পিসিসে আক্রান্ত।
প্রাণপণ চেষ্টা সত্বেও বাঁচানো যায়নি তাদের। ২১দিনের ব্যবধানে মারা যায় রাসেল ও টুম্পা। তন্মধ্যে টুম্পা মারা যায় মঙ্গলবার (২১ ফেব্রæয়ারি) সকাল ৮টায়। এর আগে ৩১ জানুয়ারি মারা যায় ভাই রাসেল। এনিয়ে গত এক বছরে সাতটি প্রাণী মারা গেলো। টুম্পার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ও চকরিয়াস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম।
মাজাহারুল ইসলাম বলেন, গত দ্ইু মাস আগে সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পা রোগে আক্রান্ত হয়। প্রথমে পার্কের ভেটেরেনারি সার্জন চিকিৎসা করলেও দুই সিংহের শারিরিক অবস্থার অবণতি ঘটতে থাকে। ফলে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে মেডিকেল বোর্ড। এই মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিমল সাইসেন্স বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.বিবেক চন্দ্র সুত্রধর।
তাদের তত্ববধানে চিকিৎসা চলাকালে ৩১ জানুয়ারি রাতে মারা যায় সিংহ রাসেল। অপর আক্রান্ত টুম্পা মারা যায় মঙ্গলবার ২১ ফেব্রæয়ারি সকাল ৮টায়।
মাজহারুল ইসলাম আরও বলেন, টুম্পার মৃত্যুর পর মঙ্গলবার চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। এরপর চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও পার্কের ভেটেরেনারি সার্জনের নেতৃত্বে সিংহী টুম্পার ময়নাতদন্ত করা হয়। এদিন বেলা ২টার দিকে মৃত সিংহী টুম্পার মরদেহ পার্কে মাটিতে পুতে ফেলা হয়।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি বার্ধক্য জনিত কারণে সিংহী টুম্পা মারা গেছে। মৃত টুম্পার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক তথ্য জানা যাবে।

এব্যাপারে পার্কে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, সাফারি পার্কের সাড়ে ৩’শর অধিক হরিণ রয়েছে। উন্মক্ত এসব হরিণ পার্কের সীমানা প্রাচীরের অরক্ষিত ২১টি স্থান দিয়ে নিকটস্থ পাহারে বের হলে শিকারীর খপ্পরে পড়ে আর ফিরতে পারেনা। তাই কিছু সংখ্যক হরিণ নিখোঁজ।

উল্লেখ্য, সাফারি পার্কে গত এক বছরে টুম্পাসহ সাতটি প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। তন্মধ্যে চারটি সিংহ, দুটি হাতি ও একটি জেব্রা মারা যায়। বিপুল সংখ্যক হরিণ রয়েছে নিখোঁজ। ##

পাঠকের মতামত: